বুধবার, ৮ জুলাই, ২০২০

Ex গার্লফ্রেন্ড 💔

Ex গার্লফ্রেন্ড 💔
 পর্ব ১... 
বাড়িতে বড় ভাই এর বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়ে দেখাশোনা চলছে। অনেক মেয়ের খবর আসছে কিন্তু কোনভাবেই বাড়ির সকলের পছন্দ হচ্ছিল না।

 অনেকদিন পর একটা মেয়ের পরিবারের খবর এল মেয়েটা নাকি খুব সুন্দর দেখতে এবং সেই সঙ্গে পড়াশোনা টাও যথেষ্ট ভালো। খবর টা শুনে বাড়ির সকলের খুব ভালো লাগলো। সবাই মিলে মেয়ের বাড়িতে যাবার জন্য একটা দিন ঠিক করলো। 

 অমনি মা আমাকে ডেকে বললেন অমুকদিন আমরা মেয়ের বাড়িতে যাচ্ছি, তুমিও আমাদের সাথেই যাবে তোমার দাদাকে সঙ্গ দিতে। 

আমার খুব একটা যাবার ইচ্ছে ছিল না কিন্তু মা কে না বলতে পারলাম না। মাকে আমি যাবো বলে দিলাম। 

পরিবারের সকলের সঙ্গে তাদের বাড়িতে পৌঁছলাম ।

 কিছু সময় পরে মেয়ে টা বেরিয়ে এল । বড় ভাইয়ের বউকে দেখার পর চোখ কপালে উঠে গেলো। এটা কে?? 

 এটা সেই নাসরিন না। 

আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। যার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল ৫ বছর আগে।
 কিন্তু এ এখানে এল কিভাবে বা নাসরিনের সাথে আমার ভাইয়ের বিয়ের যোগাযোগ কিভাবে গড়ে উঠলো?? ?? 
এইসব হাজারো প্রশ্ন আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। মেয়েটা আমাকে দেখে রীতিমতো চমকে গেছে। মেয়েটাও আমাকে দেখে অবাক কিন্তু কিছু বলতে পারছে না আর আমিও চুপচাপ থাকলাম।

 মেয়েটা ঘামতে শুরু করছে সাথে আমিও ঘামতে শুরু করলাম। মনের মধ্যে প্রবল উত্তেজনা অনুভব করলাম। দুজন দুজনকে এখনো মনে মনে ভালোবাসি শুধু সম্পর্ক টা এখন আর নেই। 

বড় ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে নাসরিনের দিকে। থাকাটাই স্বাভাবিক । কারন নাসরিনকে যে দেখবে তারই পছন্দ হবে। খুবই ভদ্র চুপচাপ ও নিরব প্রকৃতির মেয়ে। 

সেই সাথে খুবই সুন্দরী দেখতে। মনভোলানো দৃষ্টি আর মায়াবী চোখে যে কেউ হারিয়ে যেতে বাধ্য । 

 যখন আমি কলেজে ভর্তি হলাম সেই যে প্রথম নাসরিনকে দেখলাম সেই ফার্স্ট ইয়ার থেকেই আমি তার উপর ক্রাশ খেয়েছিলাম। কিন্তু সমস্যা ছিলো যখন আমি প্রথম বর্ষে পড়ি সে তখন আমার সিনিয়র। 

নাসরিন তখন দ্বিতীয় বর্ষে পড়ত। পুরো এক বছর আমার থেকে সিনিওর ছিল। অগত্যা আমি তার পেছনে ঘোরাঘুরি শুরু করলাম যেটা নাসরিনের মোটেও ভালো লাগতো না। 

তবে আমিও এত সহজে হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলাম না। প্রতিদিন কলেজে যাবা আসার সময় আমি রাস্তার পাশে অপেক্ষা করতাম । 

কিন্তু সে ফিরেও আমার দিকে তাকাতো না। রাস্তার পাশে প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকার পরও তার সাথে কথা বলতে পারতাম না। এই ভাবে বেশ কয়েকদিন কাটলো। কলেজে যখন আমায় মেয়েটা দেখত তখন খুব রাগী রাগী ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকাতো । 

তখন আমি বুঝতে পারতাম না কেন মেয়েটা রেগে রেগে তাকাতো।আমি আমার মতো প্রতিদিন তার জন্য অপেক্ষা করতাম রাস্তার পাশে। 

কলেজেও এসে নজরে রাখতাম কখন কি করে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে। বুঝতে পারছিলাম এইভাবে রাস্তায় অপেক্ষা করলে তাহলে মেয়েটার সাথে আমার আর কথা বলা হবে না। 

তাই একদিন মনে মনে ভাবলাম মেয়েটাকে একবার বলেই দেখি কি হয়। সেদিন খুব সাহস নিয়ে সকাল সকাল বের হয়ে রাস্তার পাশে অপেক্ষা করছিলাম। যেহেতু সে আমার সিনিয়র তাই কলেজে কথা বলার কোনো সুযোগ ছিলোনা সিনিয়র দাদারা তো আছেই। 

 মেয়েটা ধীরে ধীরে রাস্তা দিয়ে এগোতে লাগল। আমার হার্ট এর স্পীড বাড়তে লাগলো। মেয়েটা কাছা কাছি আসতেই অমনি বলে দিলাম - দিদি i love you... 

 বিশ্বাস করুন মেয়েটা এমন ভাবে তাকালো সেদিন যে আমি প্রথমবার সরাসরি তার চোখের দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেছিলাম। আর কোনো কিছু শোনার অপেক্ষা না করেই দৌড়তে লাগলাম।

 কিন্তু বেশিক্ষন দৌড়াতে পারিনি। আনমনে দৌড়ানোর সময় একটা মোটর সাইকেল এসে ধাক্কা মেরে দিয়ে যায় আমাকে। 

রাস্তার মাঝখানে পড়ে গেছলাম। আর তখন যন্ত্রনায় ছটপট করছি। অনেকটা কেটে গেছে। মাথাও ফেটে গেছে। উঠতে পারতেছিনা। 

চোখ বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত শুধু নাসরিনকেই দেখেছিলাম আর চোখ খোলার পরও তাকেই দেখলাম। মেয়েটা হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। হাসপাতালের বেডে আমার মাথার পাশে বসে বসে কাঁদছে। 

মেয়েটার মায়াবি মুখটা এখনো আমার চোখে ভাসে।

 সেদিন কিছু বলতে পারিনি তবে বুঝে গেছিলাম মেয়েটাও আমাকে ভালোবাসে। যাওয়ার আগে নাসরিন একটা কথাই বলে গেছিলো সেদিন। এরপর থেকে সাবধানে চলবে আর দিদি বলছো কেনো?

 আমার ভীষণ রাগ হচ্ছিল তাই তো ওইভাবে তোমার দিকে তাকাইছিলাম। আর আমি তার চোখের চাহনী দেখে সোজা হাসপাতালে। 

সম্পর্ক টা ছিলো এক বছর।

তার বাবার চাকরি ট্রান্সফার আর তার পরীক্ষার পর অন্য যায়গায় চলে গেল। এই দু টো কারনেই ব্রেকআপ হয়েছিলো আমাদের সম্পর্কের। 

এই রকমই কিছু ভাবছেন নিশ্চয় ??

 না আসলে এসবের কিছুই না। সে আরেকটা ছেলের সাথে মেলামেশা করতো যেটা আমার মোটেও ভালো লাগতো না। অনেকবার তাকে আমি না করার পরও সে শুনেনি। 

একদিন নাসরিনকে বলেই দিয়েছিলাম কি এমন সম্পর্ক তোমাদের মধ্যে যার জন্য সেদিন একটা থাপ্পড় মেরে ব্রেকআপ করে দিয়েছিলে। 

অনেক কষ্ট পাইছিলাম সেদিন। 

তার কিছুদিন পর দেখলাম সত্যিই ছেলেটার সাথে রিলেশন আছে তার। আর কি আমি আশা ছেড়ে দিলাম। তারপর কলেজের পড়া শেষ করে ছেড়ে দিলাম এই শহর ।

 চলে আসলাম নিজের শহরে। তারপর একটা কাজে ঢুকে গেলাম । তারপর কেটে গেছে ৫ বছর। নাসরীনের সাথে আর কোনোদিন দেখাও হয়নি এবং কথাও হয়নি। 


 তবে নাসরিনের ফেসবুক আইডিটা আমি জানতাম। প্রতিদিন তার প্রোফাইল টা চেক করতাম। আর দেখতাম মেয়েটা ছবি আপলোড দিছে সেই ছেলেটাকে সাথে নিয়ে।

 চলুন এবার বর্তমান পরিস্থিতি তে ফিরি। কারন আগের অতীত খুবই বোরিং বাস্তবটা উত্তেজনায় ভরপুর। এইসব ভাবতে ভাবতে অনেক টা সময় চলে গেল । হটাৎ করে আব্বু আমায় ডাক দিলেন। 

আমার ঘোর কাটলো, আব্বু জিজ্ঞাসা করলো- রাহান কেমন লেগেছে তোর?? 

আমি বললাম আব্বু বিয়েটা ভাইয়ার, তাকে জিজ্ঞেস করলেই পারো। 

ভাইয়া আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকালো।

আমি মনে মনে হাসতে লাগলাম। আমার আর নাসরিনের সম্পর্কটা ক্রস কানেকশন এর মত।

প্রথমে বড় দিদি তারপর গার্লফ্রেন্ড। তারপর এক্স গার্লফ্রেন্ড আর আজকে ভাবি। 

হা হা হা !!!! 

দারুন মনে মনে মজা হচ্ছে। 
কেনো ভাবি বললাম জানেন? কারন মেয়েটাকে সবারই পছন্দ হয়েছে। 

হঠাৎআমার চোখ গিয়ে পড়ল নাসরিনের ঠিক পেছনে তার ছোট বোন সানিয়ার দিকে। 

সেই ছোট মেয়েটা অনেক বড় হয়ে গেছে আর নাসরিনের মতোই সুন্দরি। মেয়েটা এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমিও একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবছি দুই ভাই এক বাড়িতেই বিয়ে করলে কেমন হবে। আমার চোখ আবার নাসরিনের উপর গিয়ে পড়লো।

 নাসরিনের দিকে তাকিয়ে আরেকটা জিনিস ভাবিয়ে তুললো - ছেলেটার কি হলো যার সাথে নাসরিনের এত দিনের সম্পর্ক ? তাহলে কি ব্রেকআপ হয়ে গেছে । আমার অফিসের কাজের চাপে লাস্ট ৩ মাস নাসরিনের প্রোফাইল চেক ই করা হয়নি। 
সে যাই হোক। আব্বু বড় ভাইকে বললো, - তোরা যা কথা বল আলাদা রুমে। বড় ভাই আবার আমাকে নিয়ে গেলো।
বলেনতো কেমন লাগে, আমি রুমের সামনে দাড়িয়ে আছি হঠাৎ সানিয়া আসলো,

সানিয়া :- ভাইয়া একা দাড়িয়ে যে?? 
আমি : কি করবো বলো তাদের সাথে তো আর যেতে পারবোনা। 
সানিয়া : চলুন আপনাকে পুরো বাড়িটা ঘুরিয়ে দেখাই। 
 
আমি : আচ্ছা চলো। পেছন পেছন হাটতে লাগলাম। মেয়েটা একটা একটা করে সবকিছু দেখাতে লাগলো। সবশেষে আমরা গেলাম ছাদে। 
আমি : আচ্ছা তোমার নামটা কি? 
সানিয়া : সানিয়া 
আমি : বাঃ বেশ ভালো নামতো। 
সানিয়া : জ্বি ভাইয়া আপনার নামটা কি?? 
আমি : সাকিল। 
সানিয়া : কি বললেন? 
আমি: সাকিল । 
সানিয়া : আপনার নামটা দারুন কিউট আছে। 
আমি : তুমি কোন ক্লাসে পড়ো? 
সানিয়া: ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার চলছে আমার। 
আমি : আচ্ছা তোমার নাম্বারটা আমাকে দিতে পারবে। 
সানিয়া : কেনো?? আমি : এমনি দাও। 
সানিয়া : সরি ভাইয়া আমার নাম্বার দিতে পারবোনা। 

আমি : আচ্ছা কোন সমস্যা নাই। 
সানিয়া : আপনি আপনার ফেসবুক আইডি পেতে পারেন। এতো মেঘ না চাইতেই জল, মনে মনে ভাবতে নিচে নামতিছি। নিচে নামতে নামতেই ধাক্বা খেলাম নাসরিনের সাথে। 

আমি : সরি আমি আসলে দেখিনাই আপনাকে। 

নাসরিন : ঠিক আছে । তার হাতের আলতো স্পর্শ আমার মনটাকে আবারো আঘাত করলো। শুকিয়ে যাওয়া ক্ষতটা আবারো জেগে উঠলো। চোখ জলে ভিজে উঠার আগেই সবার মধ্যে চলে আসলাম। 

চলবে?? 
বাকিটা পরের পর্বে থাকছে.....
This India-Pakistan love story went horribly wrong

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার সন্তানের বুদ্ধির বিকাশ কিভাবে ঘটাবেন ??

  https://amzn.to/3KHLreQ একজন অভিভাবক হিসেবে সন্তানের উৎকর্ষতার দিকে আমাদের সবসময় খেয়াল রাখতে হয়। আমরা সকলেই আমাদের সন্তানের মেধার বিকাশের ...